কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের উলিপুরে বিয়ের দাবীতে প্রেমিকের বাড়িতে ৬ দিন থেকে অবস্থান করছেন এক স্কুল ছাত্রী।
গ্রাম্য সালিশে ছেলে-মেয়ের পরিবারের মধ্যে বিয়ের আলোচনা চুড়ান্ত হওয়ার পর তা ভেঙে যাওয়ায় ওই ছাত্রী ছেলের বাড়িতে গিয়ে অবস্থান করছেন। ঘটনাটি ঘটেছে, উপজেলার মৌজা মধুপুর এলাকায়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ধরনীবাড়ী ইউনিয়নের মৌজা মধুপুর এলাকার সেবেন চন্দ্র বর্মনের ছেলে সুবল চন্দ্র বর্মন (২২) এর সাথে প্রতিবেশি দশম শ্রেণিতে পড়–য়া এক স্কুল ছাত্রী (১৬)র প্রায় এক বছর পূর্বে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এরপর থেকে সুবল চন্দ্র বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ওই ছাত্রীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাবাসী উভয় পরিবারের সাথে বৈঠক করে তাদের বিয়ের আলোচনা চুড়ান্ত করেন। পরবর্তীতে ছেলের পরিবার নানা অজুহাতে সময় ক্ষেপন করেন। এ ঘটনায় ছাত্রীর পিতা বাদী হয়ে সুবল চন্দ্রের বিরুদ্ধে অক্টোবর মাসে উলিপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে (৯/১) ধর্ষনের মামলা দায়ের করেন। এদিকে সুবল চন্দ্রের পরিবার ছেলেকে অন্যত্র বিয়ে দেয়ার জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন। বিষয়টি জানতে পেরে ওই স্কুল ছাত্রী বুধবার (১২ নভেম্বর) বিকালে ছেলের বাড়িতে বিয়ের দাবী নিয়ে আসেন। সেদিন থেকে ওই বাড়িতেই তিনি অবস্থান করছেন। এদিকে মামলার পর থেকে ছেলে গা-ঢাকা দিয়েছেন।
সরেজমিন রোববার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে ধরনীবাড়ী ইউনিয়নের মধুপুর এলাকার সেবেন চন্দ্রের বাড়িতে গিয়ে কথা হয় ওই ছাত্রীর সাথে।
তিনি জানান, প্রতিবেশি সুবল চন্দ্রের সাথে আমার দীর্ঘদিনের প্রেমের সর্ম্পক। সে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বহুবার আমার ক্ষতি করেছে। তার পরিবার সালিশে আমাকে মেনে নেয়ার কথাও দিয়েছিল। এই মাসের (নভেম্বরে) শুরুতে আমাদের বিয়ের কথা ছিল। কিন্তু ছেলের বাবা নানা ছলনা করে গোপনে অন্যত্র তাকে (সুবল) বিয়ে দেয়ার জন্য চেষ্টা করছিল।
এই খবর শুনে বিয়ের দাবীতে আমি এখানে বুধবার থেকে আছি। বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত আমি এখান থেকে যাবো না।
বাড়িতে থাকা প্রেমিক সুবল চন্দ্রের মা কাঞ্চন বালা গ্রাম্য সালিশের উভয় পরিবারের সমঝোতার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমার ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করায় সে দীর্ঘদিন থেকে বাড়িতে আসেন না। কোথায় আছে সেটাও জানি না। ছেলে যদি বাড়িতে থাকতো তাহলে এ বিষয়ে সমাধান হত। ছেলে না থাকায় এই মেয়েকে নিয়ে আমরা বিপদে পরেছি।
ধরনীবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য ছামাদ মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মেয়েটি কয়েকদিন ধরে বিয়ের দাবীতে ওই বাড়িতে অবস্থান করছেন। এ ব্যাপারে কিছুদিন পূর্বে সালিশ হয়েছিল, সেখানে ছেলের বাবা মেনেও নিয়েছেন। কিন্তু সালিশে ছেলে উপস্থিত ছিল না। এরপর মেয়ের পরিবার মামলা করায় সেই থেকে ছেলে গা-ঢাকা দিয়েছেন বলে শুনেছি। পরবর্তীতে ছেলের পরিবার সম্ভবত বিষয়টি মেনে না নেয়ার কারনে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ জিল্লুর রহমান ছেলের বাড়িতে মেয়ের অবস্থানের বিষয়টি শুনেছেন বলে জানান। তিনি বলেন, ধর্ষনের অভিযোগে সুবল চন্দ্রকে প্রধান আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। আসামীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।