প্রতিবেদন, কলকাতা : ৭ আগস্ট কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুতোষ বিল্ডিং – এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবৈধ ভিসির অবৈধ কার্যকলাপ ও লাগামহীন দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে অভিরূপ চক্রবর্তী, কাইয়ুম মোল্লা সহ একাধিক TMCP নেতৃত্ব।এই অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হয় পশ্চিমবঙ্গের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সমিতি WBCUPA।
মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া সুপ্রিম কোর্ট বর্ণিত বেআইনি ভিসি প্রাক্তন অধ্যাপক শান্তা দত্তের অপশাসনের ও অবৈধ কার্যকলাপের বিরুদ্ধে কার্যত তারা শান্তিপূর্ণ পিকেটিং করে আগামী দিনে গণ প্রতিরোধ গড়ে তোলার ডাক দেন। দেশের সবচেয়ে পুরানো, ঐতিহ্যবাহী কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে অধ্যাপক শান্তা দত্ত পদ আঁকড়ে আছেন, মানুষের করের টাকা অন্যায়ভাবে ধ্বংস করে যাচ্ছেন তিনি। ছাত্রছাত্রীরা বুক চিতিয়ে এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করে যাচ্ছে অথচ একদল রাম-বামপন্থী অধ্যাপক তাদের বহিরাগত গুন্ডা আখ্যা দিয়ে যাচ্ছে। এই সমস্ত অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে ধিক্কার জানিয়ে ছাত্রদের প্রতি solidarity জানাতে আজ CU,TMCP আয়োজিত আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমার্স বিভাগের প্রাক্তন ডীন
অধ্যাপক সিদ্ধার্থ শঙ্কর সাহা, WBCUPA রাজ্য কমিটি
থেকে অধ্যাপক মহীতোষ গায়েন,অধ্যাপক মনোজিৎ মণ্ডল,অধ্যাপক মনিকান্ত পারিয়া, অধ্যাপক শামীনূর রহমান, দীপজ্যোতি কর,অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক দীপেন বিশ্বাস সহ প্রায় ৩৫ জন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এর নেতৃত্ব।
ওয়েবকুপা রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর পক্ষ থেকে অধ্যাপক
মহীতোষ গায়েন বলেন,”যার বিরুদ্ধে আজ আমাদের আন্দোলন তিনি গত ৩১মে তার কার্যের মেয়াদ উত্তীর্ণ করেছেন, বর্তমানে তিনি অবৈধ তা সত্বেও তিনি নীলবাতি দেওয়া সরকারি এসি গাড়ি ব্যবহার করে জনগণের টাকা নয়ছয় করছেন,বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১১হাজার ২৪০টাকা এ্যালাউন্স নিচ্ছেন। তিনি অবসরের পরেও অবৈধ ভাবে ডীন নিযুক্ত করেছেন। অন্তর্বর্তীকালীন ভিসি থাকাকালীন সময়ে তিনি বিভিন্ন সময়ে পরীক্ষা, রেজাল্ট নিয়ে তুঘলকি কাণ্ডকারখানা চালিয়েছেন। শুধু ভিসিই নন, পরীক্ষা বিভাগের নিয়ামক,রেজিস্টারও নানান বিষয়ে মিলিত ভাবে তুঘলকি কাণ্ডকারখানা চালাতে মদত যুগিয়েছেন তাকে।এই ভিসি অনৈতিক ভাবে বহু সিন্ডিকেট,সেনেট মিটিং ডেকেছেন। ভিসি, রেজিস্ট্রার ও পরীক্ষা বিভাগের নিয়ামকের মধ্যে কোন সঠিক সিদ্ধান্তে সমন্বয় নেই। বোর্ড অফ স্টাডিজের বহু সদস্যরা বাম জমানা থেকে বহাল তবিয়তে আছেন অথচ সিলেবাস নিয়ে সঠিক ও উপযোগী সিদ্ধান্ত দূরে থাক,তারা কার্যতঃ অচল পয়সার সমতুল। দীর্ঘ সময় ধরে শূন্য পদে অধ্যাপক নিয়োগ নেই। গবেষকদের ফাইলে সই হচ্ছে না। অধ্যাপকদের CAS অর্থাৎ প্রমোশন শুধু আটকে থাকছে তা নয়।তার সাইন না হওয়াতে বহু কলেজের অধ্যাপকদের প্রমোশনের জন্য যে বিশ্ববিদ্যালয়ের নমিনি লাগে সেই ফাইলেও সই হচ্ছে না। বিভিন্ন কলেজের জিবি মেম্বার হিসেবে দুই জন বিশ্ববিদ্যালয় নমিনি পাঠাতে হয়,সেখানেও অহেতুক দেরী ও বহু ক্ষেত্রে রাম-বাম অধ্যাপকদের নাম পাঠাচ্ছেন তিনি।এর ফলে অধ্যাপক, গবেষক ও ছাত্রছাত্রীরা বিপদে পড়েছে। এদের সর্বনাশের পথে ঠেলে দিচ্ছেন এই ভিসি। পদ্মপাল মনোনীত এই অস্থায়ী ভিসির এই সব অনৈতিক কাজের দায়ভার এসে পড়েছে অযাচিত ভাবে শিক্ষা বিভাগের উপর। যা অত্যন্ত গর্হিত। তার মদতে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে চূড়ান্ত নৈরাজ্য,এই কারণে আজ আমাদের প্রতিরোধ আন্দোলন। আগামী ৭দিনের মধ্যে পদত্যাগ না করলে এবং এই কদিনেও তিনি যদি আবার অবৈধ কার্যকলাপ করেন ও আশু সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান না করেন তাহলে আমজনতাকে নিয়ে আমরা ছাত্র ও অধ্যাপক সমাজ বৃহত্তর গণ প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে “। আজকের সভায় বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক মনোজিৎ মণ্ডল অধ্যাপক,মণিকান্ত পারিয়া, অধ্যাপক সামিনূর রহমান, অধ্যাপক দীপেন বিশ্বাস, অধ্যাপক সিদ্ধার্থ শংকর সাহা, অধ্যাপক নরেন্দ্র ভট্টাচার্য,ড.বিকাশ সাউ, অধ্যাপক নম্রতা কোঠারি, ছাত্রনেতা অভিরূপ চক্রবর্তী প্রমুখ। সমস্ত বক্তার বক্তব্যে প্রকাশ পেয়েছে অবৈধ ভিসির লাগামহীন দুর্নীতি ও তার পদত্যাগ এর বিষয়। বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, ছাত্রনেতা, শিক্ষাকর্মী থেকে প্রায় ৭০জন প্রতিনিধির প্রতিরোধ কণ্ঠ ধ্বনিতে এদিনের বিশ্ববিদ্যালয় ছিল সরগরম।