এস এম এ রউফ ,কয়রা(খুলন)প্রতিনিধি ঃ খুলনার কয়রা উপজেলা আওয়ালীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এস এম বাহারুল ইসলাম সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও অপহরণ করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে। ৩ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) উপজেলার ২নং কয়রা গ্রামের মৃত আব্দুল হক শেখের ছেলে শেখ জাহাঙ্গীর কবির টুলু (৪৯) বাদি হয়ে কয়রা উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার অন্য আসামীরা হলেন কয়রা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি রোকনুজ্জামান কাজল(৩৬), কয়রা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ইখতিয়ার উদ্দীন হিরো (৩২), সুশান্ত (৩২),শহিদুল (৩৭), মেহেদী হাসান দিদার (৩৬),মিজানুর রহমান (৪৫) শাহিন শেখ (৩৮) কোহিনুর ঢালী (৪০) মিন্টু সানা (৪১) সহ অজ্ঞাত ২০-২৫ জন। মামলার অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে , আসামীদের কাজই ছিল নিরীহ বক্তিদের ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায় করা। অন্যের জমি জবর দখল, অস্ত্রের মুখে অবৈধ বল প্রয়োগ করে অর্থ ও সম্পত্তি জবর দখল এবং এলাকা ছাড়া করার হুমকি ধামকি প্রদান করা। তারই ধারাবাহিকতায় মতার দাপটে মামলার বাদী সাংবাদিক শেখ জাহাঙ্গীর কবির টুলুকে ২০১২ সালের ১০ জুন দুপুর ১ টার দিকে কয়রা সদরে প্রকাশ্য মারপিট করে আহত করে মামলার আসামীরা। এ ছাড়া তার কাছ থেকে জোর করে অর্থ আদায় করার চেষ্টা করে। ঐ ঘটনায় মারপিটে আহত হয়ে তিনি চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে মামলা করতে চাইলে তিনি মামলা করতে সাহস পায়নি। অবশেষে দীর্ঘ ১২ বছর পরে শেখ জাহাঙ্গীর কবির টুলু বাদী হয়ে এসএম বাহারুল ইসলামকে প্রধান আসামী করে ১০ জনের নামে মামলা রুজু করেছেন । যার নং সিআর ৬৪৩,তাং ৩-১২-২০২৪ ইং। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্ত পৃর্বক প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। উল্লেখ্য ইউপি চেয়ারম্যান এস, এম বাহারুল ইসলাম গত ২৭ নভেম্বর মালয়েশিয়া পালিয়ে যাওয়ার সময় ঢাকার হজরত শাহজালাল অন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে । পরে তাকে পাইকগাছা থানায় আনা হয়। পাইকগাছার আগড়ঘাটা এলাকায় বিএনপির যাত্রীবাহী ট্রলারে হামলার অভিযোগে গত ২৬ আগষ্ট ফসিয়ার রহমান নামে এক ব্যক্তি তার বিরুদ্ধে মামলা করেন। ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তারপূর্বক জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। বিগত সাড়ে ১৫ বছর কয়রায় বাহারুলের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছে মুক্তিযোদ্ধা,সাংবাদিক,অধ্য, শিক, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তি সহ নানা শ্রেনী পেশার মানুষ। গ্রামের সাধারণ পরিবারে বেড়ে ওঠা এসএম বাহারুল ইসলাম সদ্য নিষিদ্ধ হওয়া ছাত্রলীগের কয়রা উপজেলা সভাপতি হয়েই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। দুর্ধর্ষ বাহারুলের নেতৃত্বে এলাকায় গড়ে ওঠে পেটুয়া বাহিনী। শুরু করেন দখল ও চাঁদাবাজি। এলাকায় সৃষ্টি করেন ত্রাস।
তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলার সাহস পেতো না। বিরোধ করলেই পেটুয়া বাহিনী দিয়ে শায়েস্তা করতেন তিনি। কয়েক বছরের মধ্যেই আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে কোটিপতি বনে যান। একাধিকবার খবরের শিরোনাম হন। বিভিন্ন মামলার আসামি হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষক পেটানোর ঘটনায় জেলও খাটেন। তবে কমেনি তার প্রভাব। বহাল ছিল তার রাজকীয় জীবন-যাপন।