পি কে অলোক,ফকিরহাট: বাগেরহাটের ফকিরহাটের অর্গানিক বেতাগায় উচ্চমূল্যের ফসল নিরাপদ সবজি অথাৎ সেট পদ্ধতির মাধ্যমে গ্রীস্মকালিন টমোটোর চাষ করে ৭জন চাষি এলাকায় বেশ সাড়া জাগিয়ে ফেলেছেন। এ নিয়ে চলতি বছর বেতাগা ব্লকে ১১০একর জমিতে হাইব্রীড বারি টমোটো-৮ এর চাষ হয়েছে। বাম্ফার ফলন ও সঠিক সময়ে সঠিক মূল্য পাওয়ায় চাষিদের ভাগ্যও বদল হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তাদের সার্বিক সহযোগীতায় বাম্ফার ফলন ও সঠিক মূল্য পাওয়া সম্ভব হয়েছে। চাষিদের এ ধারা অব্যাহত থাকলে তারা ধাপে-ধাপে আরো উন্নতি সাধন করার পাশা-পাশি আরো স্বাবলম্বি হবেন বলেও অধিকাংশ চাষির ধারনা।
জানা গেছে, বেতাগার অর্গানিক পল্লীর চাষি আব্দুর রাজ্জাক, গত ২০২২সালে উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে সবজি চাষের উপর প্রশিক্ষন গ্রহন করেন। প্রশিক্ষন গ্রহন করার পর মাত্র ২শতক জমিতে গ্রীস্মকালিন টমোটোর চাষ শুরু করেন। সে সময় তিনি বেশ লাভবান হন। এরপর তিনি চলতি বছর জুন মাসের মাঝা-মাঝি সময়ে মাত্র ১০শতক জমিতে হাইব্রীড বারি চমোটো-৮ চাষ করেন। চাষ করাকালিন সময়ে উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে তিনি টমোটোর চারা লিবার খরচ সার পলিথিন নেট ও ভিটামিন ওরমন সহ বিভিন্ন সহযোগীতা গ্রহন করে নিরাপদ সবজির জমিতে চাষাবাদ শুরু করেন। দেখতে দেখতে টমোটোর ক্ষেত ফলনে ভরে উঠে তা যেন মনমুগ্ধকর হয়ে উঠে। সে সময় তিনি পানের বরজের ন্যায় সেট পদ্ধতির মাধ্যমে হালি করে ফিলুর মত গাছের চারা উঠিয়ে দেন। এবং উপরে পলিথিন এবং চতুর পাশের্^ নেট দিয়ে পুরো এলাকা ঘিরে ফেলেন। ভিতরে যেন কোন প্রকার বিষাক্ত পোকা-মাকড় প্রবেশ করতে না পারে, সে বিষয়টি মাথাই নিয়ে সম্পূর্ণ নিরাপদ উপায়ে টমোটোর চাষ করেন।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন ১০শতক জমি হতে এপর্যন্ত তিনি ৮মন টমোটো তুলে বাজারে ৩৫টাকা কেজি দরে মোট ২৬হাজার টাকা বিক্রয় করেছেন। তার ধারনা আগামী ৩মাসে প্রায় দেড়লক্ষ টাকার টমোটো বিক্রয় করতে পারবেন। স্বল্প খরচে অধিক ফলন পেতে হাইব্রীড বারি টমোটো-৮ এর কোন তুলনা হয়না। এছাড়া মাহম্মুদ শেখ তার ৪০শতক জমিতে, ওহিদুল ইসলাম ১০শতক জমিতে, তপন কুমার দেবনাথ ৫শতক জমিতে, আজমল মোড়ল ১৮শতক জমিতে, সেলিনা বেগম ৪শতক জমিতে ও অপূর্ব কুমার পাল ২৫শতক জমিতে টমোটোর চাষ করেছেন। এসএসিপি’র অর্থায়নে ও উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগীতা নিয়ে তাঁরা এই গ্রীস্মকালিন টমোটোর চাষ করে লাভবান হয়ে আর্থিক ভাবে বেশ স্বাবলম্বি হয়েছেন।
এব্যাপারে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার মন্ডল,সোলায়মান মন্ডল ও উপকেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শেখ সাখাওয়াত হোসেন এর সাথে আলাপ করা হলে তাঁরা বলেন, নিরাপদ সবজি উৎপাদনের লক্ষে তারা মাঠপর্যায়ে বিভিন্ন চাষিদের প্রথমে প্রশিক্ষন প্রদান ও পরে সবজি উৎপাদনে আর্থিক এবং সার্বিক সহযোগীতা প্রদান করেছেন। যে কারনে চাষিরা উদ্ভুদ্ধ হয়ে সবজি চাষে আরো উৎসাহী হচ্ছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও অর্গানিক বেতাগার প্রতিষ্টাতা স্বপন দাশ এর সাথে আলাপ করা হলে তিনি বলেন, আমরা কৃষিতে স্বয়ংসম্পূনতা অর্জন করতে পারলেও নিরাপদ সবজি উৎপাদনে তেমন একটা সফলতা দেখাতে পারেনী। তাই আমরা কৃষির প্রতিটি সেক্টরে যাহাতে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করা যায়, সে বিষয়টি মাথায় নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করে চলেছি।