নিউজ ডেস্ক: দেখতে এটিএম কার্ড। তাতে ব্যবহার করা যায় সিম। সংযোগ থাকে ক্ষুদ্র ব্ল-টুথ ইয়ার ফোন। দায়িত্বরতদের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিশেষ এসব ডিভাইস শরীরের বিভিন্ন অংশে লুকিয়ে নিয়োগ পরীক্ষার হলে প্রবেশ করছে অসাধু চাকরিপ্রত্যাশীরা।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, কতগুলো স্মার্ট ওয়াচ যেগুলোতে হাতের ঘড়ির সঙ্গে নানা রকমের মেসেজ ওখানে টাইপ হয়ে চলতে থাকবে। এগুলো দিয়ে কখনো কথা বলাও যায় আবার কখনো কথা শোনা যায়। আর কতগুলো আছে একদম সুক্ষ্ম ইয়ারফোন যেটা কানে থাকবে আর একটা ছোট স্মার্ট কার্ডের মত ডিভাইস যেটা শরীরের বিভিন্ন অংশে লাগানো থাকে যার ভেতরে একটা সিমকার্ড লাগানো থাকে। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে একদল লোক পরীক্ষার হল থেকে পরীক্ষা চলার সময়ে প্রশ্নটা বাইরে বের করে দেয়। এরপর তারা এই প্রশ্ন কপি করে নেই এবং বিষয় বিশেষজ্ঞদের দ্বারা সমাধান করেন।
চক্রটি কয়েক ধাপে কাজ করে। গ্রাম, শহর, উপশহর থেকে চাকরিপ্রার্থী সংগ্রহ করে একটি দল। এই দলে কাজ করে রুপা, রনিসহ ৪ থেকে ৫ জন। পরীক্ষার হল থেকে প্রশ্ন সংগ্রহ ও তা সমাধান করে আরেকদল।
এই দলে আছে তিন-চারজন। অন্য দলটি ডিভাইস সরবরাহ করে। মাহমুদুল হাসান আজাদ এবং রোমান এই দলের অন্যমত দুই হোতা। এই দুজনের মধ্যে রোমান রেলওয়ের সহকারী স্টেশন মাস্টার এবং আজাদ বরখাস্তকৃত সরকারি কর্মকর্তা।
এ চক্রের এক সদস্য বলেন, ওদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ থাকে যে সে লিখিত পরীক্ষায় টিকলে আমাদেরকে এতটাকা দিবে এবং কেউ যদি পুরো চাকরির যোগাযোগ এ আসে তাহলে এতটাকা দিবে।
এক ভুক্তভোগী বলেন, অডিটরে চাকরি দিতে চেয়েছিল। এজন্য আমার কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা চেয়েছিল।
গ্রেফতারকৃত ১০ জনের মধ্যে তিনজন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হলেও বাকিরা এর আগেও বেশকয়েকটি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত ছিল।
মশিউর রহমান বলেন, ২০১৯ সালের শেষের দিকে এ কাজ করতে গিয়ে তারা ধরা পড়ে। তাতে দেখা গেছে যে, একেবারে এমএলএসএস পদে নিয়োগের জন্য ছয় থেকে আট লাখ টাকা নিয়েছে এবং যারা ১১, ১২ গ্রেডের কর্মচারী তাদের কাছ থেকে ১৬ থেকে ১৮ লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিতে গেছে।
পরীক্ষার হলে মোবাইলসহ বিশেষ ধরনের ডিভাইস নিয়ে কিভাবে চাকরিপ্রার্থীরা প্রবেশ করেছিল তাও খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা।